এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আরো এক সংকটের মুখে বিশ্ব। গত কয়েক মাস ধরেই দেখা যাচ্ছে চীনে শুয়োরের প্রজাতি ঘনঘন ইনফ্লুয়েঞ্জার একটি বিশেষ ধরনে আক্রান্ত হচ্ছে এবং আতঙ্কের কথা এই যে এই ভাইরাস সহজেই শুকর থেকে মানুষের দেহে সংক্রমনের ক্ষমতা রাখে । সেন্ট জুড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী দেহে সংক্রমিত রোগ বিশেষজ্ঞ রবার্ট ওয়েবস্টার জানিয়েছেন এই রোগ নিয়ে অনুমান ও প্রত্যাশা ব্যতীত আর কিছুই করার নেই কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বিশেষ ইনফ্লুয়েঞ্জার স্ট্রেইন কোন মানব সংক্রমণের লক্ষণ না দেখালেও, ভবিষ্যতে মিউটেশনের পর তা আমাদের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে বিজ্ঞানী মহলের একাংশের আশঙ্কা। আগামীই একমাত্র এর উত্তর দিতে পারে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, যখন একই আক্রান্ত শরীরে এক্ষেত্রে শুকর, একাধিক ভাইরাসের স্ট্রেইন দ্বারা ইনফেক্টেড হবে তখন তারা নিজেদের মধ্যে সহজেই জিন প্রতিস্থাপন করতে পারবে, যার ফলে চারিত্রিক পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক হবে। এই পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় ‘রিএসর্টমেন্ট’ বলে। ন্যাশনাল অ্যাক্যাডেমি অফ সাইন্স-এর ধারণা অনুযায়ী এই ভাইরাসটি, জি-৪ সঙ্গে ডাব করছে। এই মিশ্র ভাইরাসটির স্ট্রেইনের সঙ্গে এশিয়ার বেশ কিছু পাখির প্রজাতি ও ইউরোপীয় বংশের কিছু ব্রিডের মধ্যে সংক্রমণ যোগ্য H1N1 ইনফ্লুয়েঞ্জার সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা ২০০৯ সালে মহামারীর আকার ধারণ করেছিল।
এছাড়াও মার্কিন অভিয়ান- হিউম্যান ও পিগ ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথেও এর অভূতপূর্ব মিল দেখা যাচ্ছে।
এই ভাইরাসের জি-৪ ভ্যারিয়েন্ট ভাঁজ ফেলেছে বিজ্ঞানীদের কপালে কারণ ভাইরাসটির কেন্দ্রীয় অংশ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার যা মানবদেহের প্রতিকারহীন ও দ্রুত সংক্রমণ যোগ্য। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথোজেন বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড হোমস মন্তব্য করেছেন যে বিষয়টি বিশেষ পর্যবেক্ষণের দাবি করে। সিএইউ বা চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ লিউ জিনহুয়া বিভিন্ন শুয়োর খামার থেকে ৩০০০০ লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও ১০০০ টি ক্ষেত্রের রেসপিরেটরি রোগে আক্রান্ত করে শুকরের শ্লেষ্মা নমুনা সংগৃহীত হয়। স্টকপাইল থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে ভ্যাক্সিন তৈরির কথা ভাবছে তারা।